Thursday, Mar 28th

Last update09:04:19 PM GMT

: সম্পাদকীয় ভুলে ভরা এনআইডি

ভুলে ভরা এনআইডি

E-mail Print PDF

কাগজে তৈরি জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তে মেশিন রিডেবল স্মার্ট কার্ড বিতরণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন এক দিগন্তের সূচনা করেছিল। তিন স্তরে ২৬৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজিত এই স্মার্ট কার্ডে ২২ ধরনের সেবা পাওয়ার কথা। ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্যসংবলিত স্মার্ট এনআইডি কার্ডকে বলা হচ্ছে জাতীয় সম্পদ। স্বাভাবিকভাবেই স্মার্ট কার্ড হাতে পাওয়া নাগরিকদের জন্য ছিল অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের হাতে স্মার্ট এনআইডি কার্ড পৌঁছে যাওয়ার কথা। সে অনুযায়ী দেশের অনেক জেলায়ই স্মার্ট এনআইডি বিতরণ শুরুও হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ এলাকাতেই এনআইডি ভুলে ভরা। কারো এনআইডিতে বাবা কিংবা মায়ের নাম ভুল। কোনোটিতে নাগরিকের নিজের নামের বানানই ভুল। অনেকের জন্ম তারিখই পাল্টে গেছে স্মার্ট কার্ডে। মৌলভীবাজার সদর ও কুলাউড়ার ভোটারদের এনআইডি কার্ডে সবচেয়ে বেশি ভুল ধরা পড়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার সদরের দুই লাখ ২২ হাজার ৮৫২টি স্মার্ট কার্ডের ইংরেজিতে জেলার নামের বানান ভুল এসেছে। জামালপুরে পাওয়া গেছে জন্মস্থান ‘পাকিস্তান’ লেখা কার্ড। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, প্রায় আট কোটি ১১ লাখ নাগরিকের এনআইডি কার্ডের মূল তথ্য ফরমের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ভুল যাচাই করাও সম্ভব হচ্ছে না। আবার ভুল সংশোধনের জন্য নাগরিকদেরই আড়াই শ টাকার মতো ফি দিতে হবে। যে ভুল নির্বাচন কমিশনের সেই ভুল সংশোধনের জন্য নাগরিকদের কেন ফি দিতে হবে? বিড়ম্বনা ভুল সংশোধন করতে গিয়েও। কোথাও কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না ২ নম্বর ফরম, যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া ছিল।
স্মার্ট কার্ডে ভুলের কারণে নাগরিকদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে কিংবা পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে দেখা যাবে, ফরমে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে এনআইডির তথ্যের মিল নেই। যাদের কার্ডে বাবা কিংবা মায়ের নাম ভুল এসেছে, তাদেরও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। স্মার্ট কার্ড ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সনদে নামের বানান আলাদা থাকার কারণে অনেককে বিপদে পড়তে হতে পারে। সনদ ও স্মার্ট কার্ডের নামের বানান না মিললে সমস্যা দেখা দেবে। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে চাকরির আবেদন, সব ক্ষেত্রেই অসুবিধায় পড়তে হবে ত্রুটিযুক্ত কার্ডের কারণে। কাজেই এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্মার্ট কার্ডের জন্য দেওয়া তথ্যে বা জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য দেওয়া কার্ডে কেউই ভুল তথ্য দেবে না। মা-বাবার নাম কিংবা জন্ম তারিখও ভুল হওয়ার কথা নয়। নাগরিকদের নামের বানানই বা ভুল হয় কী করে? এসব বিষয় খতিয়ে দেখার আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই এই ভুলের দায় নিতে হবে। ভুল সংশোধনের কাজটি যাতে সহজতর হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

Share this post