Friday, Apr 19th

Last update09:04:19 PM GMT

: শেষের পাতা এবারই প্রথম ভোট দেবেন বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দারা

এবারই প্রথম ভোট দেবেন বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দারা

E-mail Print PDF

এফএনএস এক্সক্লসিভ: ভারতের সাথ ছিটমহল বিনিময়ের পর এবারই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন সেখানকার বাসিন্দারা। বিনিময়ের এক বছরে পাল্টে গেছে বিলুপ্ত ছিটমহলের দৃশ্যপট। সর্বত্রই লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। যে দিকে চোখ যায় শুধুই উন্নয়নের চিহ্ন চোখে পড়ে। এখানকার বাংলাদেশিরা ৬৮ বছর হতে সরকারি সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। এখন তারা মুক্ত বিহঙ্গের মতো। এখন তারা সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার শিবেরকুটি ছিটমহলের ৭৯ বছরের আব্দুর রহিম জানালেন, ভোট কি কখনো বুঝিনি, জানতেও পারিনাই। জীবনের শেষ বয়সে এসে এবার ভোটার হতে পেরেছি। এজন্য তিনি মুজিব কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো জানান, বেঁচে থাকতে নতুন পরিচয় পেলাম, জীবনে এবারেই প্রথম ভোট দিতে পারব- এজন্য আমরা নতুন ভোটাররা খুব খুশি। ৬৮ বছর পিছিয়ে থাকা বিলুপ্ত ছিটমহলে জ¦লছে বৈদ্যুতিক বাতি। এখানকার বাসিন্দারা পেতে শুরু করেছেন বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ সরকারি সকল অন্যান্য সুবিধা। স্বাস্থ্যসেবায় বিলুপ্ত ছিটমহলে টিন সেট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী ক্লিনিক। কোথাও কোথাও পাকা দালানও হয়েছে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় এখনো ব্যাংক থেকে সহজ সর্তে ঋণ প্রদান কার্যক্রম চালু হয়নি। সেই সুযোগও এখানকার অনেকে পেতে শুরু করেছে। কিছু দিনের মধ্যে আমরাও হয়তো সেই সুবিধা পেয়ে যাবো। জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা শুরু হয়েছে। গত ৩১ জুলাই মধ্য রাতে ৬৮ বছরের বন্দিদশা থেকে মুক্তির পর ছিটলমহল বিনিময়ের এক বছর প্রথম বর্ষপূর্তি পালন করে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। ওইদিন বিজয় উল্লাসে মেতেছিল লালমনিরহাট জেলার অভ্যন্তরে সদ্য মিশে যাওয়া ৫৯টি বিলুপ্ত ছিটমহলের নতুন বাংলাদেশিরা। এখানকার সব বয়সের নারী-পুরুষ যে যার মত নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাস করেছে। দিনটিকে স্মরণে রাখার জন্য দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশীয় নানা গান দিয়ে শুরু হওয়া মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি চলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হা-ডু-ডু ও লাঠি খেলা। গত বছরের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে ৬৮ বছরের বন্দি জীবনের অবসান ঘটে ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহলের কয়েক হাজার মানুষের। এরমধ্যে ১১১টি বাংলাদেশের এবং ৫১টি ভারতের ভু-খ-ের সাথে যুক্ত হয়। বাংলাদেশের ১১১টির মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় ১২টি, লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগ্রাম জেলায় ৩৬টি এবং নীলফামারী জেলায় রয়েছে ৪টি বিলুপ্ত ছিটমহল। লালমনিরহাট জেলার ৫৯টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে সদর উপজেলায় ২টি, হাতিবান্ধা উপজেলায় ২টি ও বাকি ৫৫টির অবস্থান পাটগ্রাম উপজেলায়। তবে পাটগ্রামে ৫৫টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে ১৭টিতে কোন জনবসতি না থাকায় এগুলোকে আবাদি জমি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

Share this post