Saturday, Apr 20th

Last update09:04:19 PM GMT

: প্রথম পাতা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মহড়ায় রাজধানীতে জনদুর্ভোগ

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মহড়ায় রাজধানীতে জনদুর্ভোগ

E-mail Print PDF

FNS 12 11 18 N 14স্টাফ রিপোর্টার: জনগণের সেবার করার সুযোগ পেতে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে দুই প্রধান দলের প্রার্থী হতে চাইছেন যারা, তাদের মধ্যে অনেকের মহড়া রাজধানীবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয় থেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ফরম দেওয়া শুরুর পর থেকে ধানম-ি এলাকায় যানজট চলছে প্রতিদিনই। গতকাল সোমাবার বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হলে নয়া পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশের সড়কেও দেখা দিয়েছে যানজট। সারাদেশে ৩০০টি সংসদীয় আসনের প্রতিটিতে বড় দল দুটির প্রার্থী থাকছে; এই দুই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীও বেশি। প্রথম তিন দিনেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৩ হাজার জনের বেশি। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বেশিরভাগ নিজেদের শক্তি দেখাতে মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন দলীয় কার্যালয়ে; অনেকের মিছিলে থাকছে মোটর সাইকেল ও গাড়ির বহর। গতকাল সোমাবার দুপুর ১টায় ধানম-ির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান নেত্রকোনা-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরিফ খান জয়। মোটর সাইকেলের বহরের পাশাপাশি বাস-পিকআপ এবং ট্রাকে করে বিশাল মিছিল নিয়ে যান তিনি। ওই সময় মোহাম্মদপুর থেকে যেসব গাড়ি জিগাতলার দিকে যাচ্ছিল, সবগুলোকে থমকে থমকে মিছিলের পেছন পেছন যেতে হচ্ছিল। এর আগেও ছিল অন্য প্রার্থীদের এমন মিছিল। মিডলাইন পরিবহনের একটি বাসের কর্মী আবদুল্লাহ বলেন, সকাল ১০টায় মোহাম্মদপুর থেকে রওনা হয়ে দুপুর ১২টায় ধানম-ি পৌঁছান তিনি। শুক্রবার থেকেই এই রাস্তায় যানজট শুরু হইছে। কালকে অবস্থা আরও খারাপ ছিল। গতকাল সারাদিনে মাত্র দুই ট্রিপ মারতে পারছি। আইজ দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগলো এই রাস্তা আইতে। যানজটের কারণে রিকশা না পেয়ে হেঁটেই রওনা হতে দেখা যায় লালবাগগামী তরুণী সুমাইয়া জামানকে। তিনিও আগের দিন যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন। সুমাইয়া বলেন, কাল বাসায় যেতে তিন ঘণ্টা লেগেছে। আজও যানজট থাকায় কোনো রিকশা এদিকে আসে না। বাসও চলে ধীরে। এজন্য ধানম-ি ৯ নম্বর থেকে হেঁটেই চলে এসেছি। জিগাতলা মোড় পার হয়ে রিকশা নেব। জিগাতলার কাছে যেখানে আওয়ামী লীগের কার্যালয় সেই ধানম-ি ৩ নম্বর সড়কের দিনের বেশিরভাগ সময়ই পূর্ব পাশের সড়কে যানবাহনকে আটকে যেতে হচ্ছে। কারণ একটির পর একটি মিছিল যাচ্ছে নেই পথ দিয়ে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের রাখা গাড়িও চলাচলের পথ সংকীর্ণ করে তুলেছে। ধানম-ি এলাকায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত কয়েকদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটির পর এই শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে গলদঘর্ম দেখো গেছে অভিভাবকদের। গতকাল সোমাবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দিতে যান ঢাকা-৭ আসনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসিবুর রহমান মানিক। তার গাড়িবহর এলিফ্যান্ট রোড থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় হয়ে জিগাতলার দিকে যাওয়ার সময় মিরপুর রোডে দুদিকের যান চলাচল কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে। ধানম-ি এলাকায় যানজট সামলাতে হিমশিম খেতে দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনের সড়কে দায়িত্ব পালনরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছ যানজট। যত বড় মিছিল আসে, যানজটও তত বেশি হয়। তবে আজ পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। গতকাল সোমাবারই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শেষ হয়েছে। ফলে এরপর যানজটের ধকল কমবে বলে আশা করছেন ধানম-িবাসী। অন্যদিকে ধানম-িতে শেষ হওয়ার দিন গতকাল সোমাবার বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি। এজন্য সকাল থেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভিড় ছিল নয়া পল্টনে। মনোনয়ন ফরম কিনতে আসা নেতা এবং কর্মীদের বহনকারী যানবাহন রাখা হয় ইনার সার্কুলার রোডে। ফলে ওই সড়কেও যানজট লেগে যায়। পরে পুলিশ এসে সড়কের এক লেইনে যান চলাচলের ব্যবস্থা করলে ওই এলাকার যানজট পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুটি এলাকার সড়কে চাপ বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা হলেও ‘ম্যানেজ’ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক, দক্ষিণ) এস এম মুরাদ আলী। তিনি বলেন, এক জায়গায় অতিরিক্ত চাপ হয়ে গেলে একটু সমস্যা হয়ই। তবে সেটা আমরা ডাইভারসন দিয়ে ম্যানেজ করছি। যেসব গাড়ি জিগাতলা হয়ে যেত সেসব গাড়িকে মিরপুর রোড হয়ে পাঠাচ্ছি। পল্টনের আশপাশে অনেকগুলো সড়ক থাকায় যানবাহন বিকল্প পথে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ কারণে ওই এলাকায় যানজট তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। এবার নির্বাচন কমিশন অনলাইনে মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিলেও রাজনৈতিক দলগুলোর তেমন কোনো পদক্ষেপ ছিল না।

Share this post