রাজনৈতিক কর্মসূচি যেন জনগণের ভোগান্তি না হয়। এর বিপরীত হলে বাধ্য হয়ে এসব কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। গতকাল বুধবার রাজধানীর হোসেনি দালান ইমামবাড়ায় পবিত্র আশুরা উদযাপন ও তাজিয়া মিছিলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। ডিএমপি কমিশনার বলেন, সমাবেশের জন্য আমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ৯টি দলের আবেদন পেয়েছি। আমরা পর্যালোচনা করে কয়েকটি দলকে অনুমতি দেবো। যারা অনুমতি পাবেন, তাদের রাজনৈতিক সমাবেশ করা, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ওয়ার্কিং ডে-তে বিশাল বিশাল জনসভা করে লাখ লাখ মানুষকে রাস্তায় আটকে রাখার মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করে, তারা যেন ভবিষ্যতে ওয়ার্কিং ডে-তে না দিয়ে বন্ধের দিনগুলোতে কর্মসূচি গ্রহণ করেন। আর যারা সমাবেশে আসবেন তারা যেন লাঠিসোটা বা ব্যাগ নিয়ে না আসেন। তিনি বলেন, আপনারা সমাবেশ করেন, কিন্তু জনগণকে কষ্ট না দিয়ে। হয়তো ভবিষ্যতে এমন সময় আসবে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে গেলে আমাদের বাধ্য হয়ে এসব কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হতে পারে। খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ১০ই মহররম পবিত্র আশুরা উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বিভাগ সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে এই অনুষ্ঠান পালিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন আগামী ২৯ জুলাই পবিত্র আশুরা। সারা বিশ্বে মুসলিম স¤প্রদায় অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পবিত্র আশুরা উদযাপন করে থাকি। শিয়া স¤প্রদায় আশুরা উপলক্ষে সুন্নিদের থেকে আলাদা কিছু রীতি ও নিয়মকানুন তারা পালন করেন। গত সাড়ে ৪০০ বছর ধরে শিয়া স¤প্রদায় এই ইমামবাড়া থেকে তাজিয়া মিছিল ও প্রার্থনাসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন। মূল অনুষ্ঠানটি পালন করা হবে ২৯ জুলাই। প্রতিবারই শান্তিপূর্ণভাবে এই অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়ে আসছে। কিন্তু ২০১৫ সালে তাজিয়া মিছিলে এখানে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল। ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ যারা করেন, তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। তারপর থেকে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে এই অনুষ্ঠানে আমরা বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। গোলাম ফারুক বলেন, আজ আমরা এখানে ঘুরে ঘুরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখলাম। আমরা ইমামবাড়া এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে এসেছি। রাস্তাগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। এই এলাকার সামনে-পেছনে সাদা পোশাক ও পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবে। এই পুরো এলাকা ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে সুইপিং করা হবে। যাতে পুনরায় কোনো দুষ্কৃতকারী এখানে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটাতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করব আগামী ২৭,২৭ ও ২৯ জুলাই অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে এই অনুষ্ঠান পালিত হবে। এ ক্ষেত্রে আয়োজকদের প্রতি আমাদের কিছু পরামর্শ রয়েছে। তাজিয়া মিছিলে যেন উচ্চৈঃস্বরে ঢাক-ঢোল না বাজানো হয়, গায়ে চাদর ঢেকে কোনো লোক যেন চলাফেরা না করে, শরীরের আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করা, শিশুদের জন্য দৃষ্টিকটু হয় এসব বিষয় এড়িয়ে চলা। আয়োজকদের সঙ্গে মিটিং করে এসব বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি। ওনারাও কিছু নিরাপত্তা পরামর্শ দিয়েছেন। আশা করি সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবো।
< Prev | Next > |
---|