Wednesday, May 01st

Last update09:04:19 PM GMT

: প্রথম পাতা বিএনপি সংঘাত করলে পুলিশ চুপ থাকবে না: কাদের

বিএনপি সংঘাত করলে পুলিশ চুপ থাকবে না: কাদের

E-mail Print PDF

kaderস্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি সংঘাত করলে পুলিশ চুপ করে থাকবে না বলে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে এ কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি নেই, আর শোকের মাসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির ধরন পরিবর্তন হবে। নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তারা সংঘাত করলে পুলিশ চুপ করে থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) কোন বিদেশি প্রতিনিধি তত্ত¡াবধায়ক সরকারের কথা বলেননি বলে জানিয়ে কাদের বলেন, আমার কথা নির্বাচন করতে হবে। মার্কিন প্রতিনিধি, ইউরোপীয় ইউনিয়েনের প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের প্রিতিনিধির মধ্যে যারা আলোচনা করেছেন তাদের মধ্যে কোন বিদেশি প্রতিনিধি বলেননি তত্ত¡াবধায়ক চাই। আমরা শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই, সংসদ বিলুপ্ত করো। তাদের (বিএনপির) মূল দাবির সঙ্গে কেউ নাই। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবো কোন স্বার্থে। এটি সুষ্ঠু না হলে আমরা দায়ী হবো। অন্য কোন কারণে না হলে তারা দায়ী। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি ক‚টনীতিকদের তৎপরতা যে ভিয়েনা কনভেনশনের পরিপন্থি, তা তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের যে তৎপরতাকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কীভাবে দেখছেন, এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বা পৃথিবীর যে কোনো দেশে তাদের কার্যক্রমের একটি সীমানা আছে-ভিয়েনা কনভেনশন আছে। এটি মেনে তারা যদি চলেন, তাহলে আমাদের তো বলার কিছু নেই। আমরা গিয়ে তাদের সঙ্গে মারামারি করবো? তাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আপনাদের তৎপরতা ভিয়েনা কনভেনশনের বিরুদ্ধে। এ কথা বলার তো অধিকার আমাদের আছে। সেটা আমরা বলেছি। আমরা কী তাদের সঙ্গেও সংঘাত করবো, প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, আমরা যুক্তি দিয়ে তাদের বলেছি-যুক্তিরও একটা বিষয় আছে। তারা যে কথাগুলো বলে আসছেন, তারা নিজেরাও যদি সেই কথার বিরোধিতা করেন-তা তো স্ববিরোধী। আমরা তাদের স্মরণ করে দেব, আপনারা সঠিক কাজ করছেন না, এটি আমাদের কাজের সীমানার পরিপন্থি। তিনি বলেন, দুনিয়ায় অনেক কিছু চলছে। অনেকে আমাদের উপদেশ দেয়, তারা রাশিয়া-ইউক্রন যুদ্ধ থামাতে পারে না। সুদান দুই দেশ হলো, তিন দেশ হয়ে যাচ্ছে। গতকাল (গত রোববার) একটা অভ্যুত্থান হয়ে গেলো। কাগজে একটা প্রতিবাদ ছাড়া কিছু করতে পারছে না। পারছে সুদানে? ফিলিস্তিনে? ইউক্রেনে? আয়নায় নিজের মুখও দেখা উচিত। বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি কেন খেলেন সেটা জিজ্ঞাসা করেন। এত ক্ষুধা, রাজনৈতিক ক্ষুধা। কিসের রাজনীতি করেন, তিন দিনও খাইনি আমরা। ক্ষুধা লেগেছে তিনি খেয়েছেন, একটা সৌজন্য। একজন রাজনৈতিক কর্মী ফল পাঠিয়েছেন, এটা পাঠাতেই পারেন। তিনি অসুস্থ হয়েছেন ফল পাঠাতেই পারেন, রাজনীতিতে সৌজন্যতা আছে। বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সেতুমন্ত্রী বলেন, সমাবেশের পরদিন বিএনপি ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি দিল। পথ অবরোধ করবে, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-উত্তরবঙ্গ, ঢাকা-ময়মনসিংহ রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। এটা কেমন কর্মসূচি? এটা কোন গণতন্ত্র? নির্বাচন সামনে রেখে যারা এ কর্মসূচি দেয় ভিসানীতি তাদের ওপর বর্তায়। কারণ এটা পরিষ্কার নির্বাচনে বাধা। তিনি বলেন, ভিসানীতি যদি কেউ প্রয়োগ করে তাহলে এটা তাদের পাওয়া উচিত। আমরা এ কথা বলতে চাই। বিএনপি হোঁচট খেয়ে গোলাপবাগ থেকে সোহরাওয়ার্দী গেল। কোথায় গেল সে সাহস? পুলিশের অনুমতি নাকি নিবে না। পরে অনুমতি নিয়েই তো গেল। রাজনীতি এত সোজা! বিএনপির সমাবেশে তারেক জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের উদ্দেশ্য একটা লাশ ফেলবে। তারা লাশ চায়, তারেক জিয়া লন্ডন থেকে ভিডিওতে বলছেন একটা লাশের বদলে ১০টা লাশ ফেলবেন। কি এ্যাটিচুট, তাদের আসল এ্যাটিচ্যুট। পুলিশের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামের প্রবেশ পথে রাস্তা বন্ধ করে দিলে পুলিশ কি চুপ করে বসে থাকবে। জনগণের জানমাল রক্ষা, চলাচল নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। নির্বাচনের আগে ও পরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিএনপি চায় যেকোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে চায়। এক প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, আমরা কোনো উত্তেজনায় যাব না, আমরা নির্বাচন চাই। তারা যেকোনো মূল্যে, যেকোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে চায়। এটা হলো তাদের লক্ষ্য। জনগণ চাইলে আবারও থাকব, না চাইলে থাকব না। আজকে আমাদের কর্মসূচি নেই। নির্বাচন পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, শোকের মাসে আমাদের কর্মসূচির ধরন পরিবর্তন হবে, শোকের মাসের গাম্ভীর্য বজায় রাখতে হবে সঙ্গে সঙ্গে কর্মসূচিও থাকবে। নির্বাচন পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি নাই, আমরা মাঠে আছি। অপর প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা নির্বাচন চায় তারা সংঘাত চাইতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ বিপরীত। আমরা কেন যাব? আমরা গেলে তো সংঘাত হবে। রাস্তা বন্ধ করে দিলে কি পুলিশ চুপ থাকবে? আমাদের লোকজন শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থানে ছিল, যে সব ছবি এসেছে সেগুলো বিএনপির। পুলিশ যদি রাস্তা বন্ধ করা ঠেকাতে ব্যর্থ হত, সেখানে আমরা সহযোগিতা করতাম। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার প্রতিনিধি, বিদেশি কোনো দূতাবাস, ইইউ বা অন্য কেউ যারাই আলোচনা করেছে, এ পর্যন্ত বলেনি তত্ত¡াবধায়ক সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ কিংবা সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। বিএনপির যে মূল দাবি তার সঙ্গে কেউ নেই। আমরাও চাই শান্তি পূর্ণ নির্বাচন, তারাও চায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। বিএনপির এক দফার সঙ্গে কেউ নেই। এ মতবিনিময়ের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও ঢাকা ১৭ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

Share this post