পাবনার পৃথক স্থানে ২ স্কুল ছাত্রী ও গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ

Print

স্টাফ রিপোর্টার: পাবনার সুজানগরে তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া শিশু ও সপ্তম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী এবং ঈশ্বরদীতে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুজানগর থানার ওসি শরিফুল আলম বলেন, উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নের শোলাকিয়া গ্রামে বাড়িতে ঢুকে ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে এক গৃহবধূকে সাতজন মিলে ধর্ষণ করেছে বলে পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে। ওই গ্রামের জনাব কাজী, বাতেন কাজী, রাসেল কাজী, আবু মুছা, আরিফ ও কালামসহ সাতজন মিলে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। পরে প্রতিবেশীরা টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। এ ঘটনায় থানায় সাতজনকে আসামি করে মামলা হলে পুলিশ জনাব কাজীকে গ্রেফতার করে বলে জানান ওসি শরিফুল। জেলার ঈশ্বরদী থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, বরইচরা গ্রামে তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া শিশু স্কুল থেকে ফেরার পথে একই গ্রামের হযরত আলী ফুঁসলিয়ে লিচুবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। শিশুটি বাড়ি গিয়ে স্বজনদের জানালে পরিবারের লোকজন থানায় অভিযোগ দেয়। পরে পুলিশ ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে হযরত আলী নামে একজনকে গ্রেফতার করে। শিশুটিকে পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। হাসপাতালের চিকিৎসক শামিমা খাতুন পলি বলেন, প্রাথমিকভাবে শিশুটিকে নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে। পরীক্ষা শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এদিকে, পাবনার সুজানগর পৌরসভায় এক কাউন্সিলরের বাড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ শেষে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সুজানগর থানার ওসি শরিফুল আলম বলেন, গত শুক্রবার বিকালে অভিযোগ পাওয়ার পর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহেব আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুঁজছেন তারা। পৌর আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক নায়েব আলীর ছোট ভাই সাহের আলী তার বাড়িতে ওই কিশোরীকে নেওয়া হয়েছিল স্বীকার করলেও ধর্ষণ বা মুক্তিপণ আদায়ের কথা ‘জানেন না’ বলে দাবি করেছেন। স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, ভবানীপুর এলাকার সজীব নামের এক তরুণের সঙ্গে তার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যায় পরিবারকে না জানিয়ে সজীবের সঙ্গে বেরিয়ে যায় তার মেয়ে। তাদের বিয়ে করতে সহযোগিতা করার কথা বলে ভবানীপুর এলাকার আনাই তাদের নিয়ে যায় কাউন্সিলর সাহেব আলীর বাড়িতে। সেখানে নিয়ে আমার মেয়ের কাছ থেকে টাকাপয়সা আর সোনার গয়না কেড়ে নেওয়া হয়। পরে সাতজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটির মা বলছেন, ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার বাসায় খবর দিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন কাউন্সিলর সাহেব আলী। আমি বাড়ির আসবাবপত্র বেচে ২০ হাজার টাকা সাহেব আলীকে দিয়ে আজ (গত শুক্রবার) মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। স্থানীয়রা জানান, ভবানীপুর এলাকার জয়নাল খানের ছেলে আনাই কাউন্সিলর সাহেব আলীর সহযোগী হিসেবে পরিচিত। ওসি শরিফুল বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আট্ক করার পাশাপাশি অন্যান্যের আটকের চেষ্টা চলছে। কাউন্সিলর সাহেব আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খোঁজা হচ্ছে। মেয়েটিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাবনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে গত শুক্রবার রাত পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানান ওসি। আটক তিনজনের নাম পরিচয়ও তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করেননি। আর মেয়েটির মা বলছেন, তার স্বামী নেই। মেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে বুঝতে পারার পর তিনি একা কী করবেন বুঝে উঠতে পারেননি।

Share this post