মানবাধিকার বিষয়ক পরিচালক নিয়োগ দিচ্ছে ফেসবুক

Print

এফএনএস আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ফেসবুক কোনও ভূমিকা রাখছে কিনা তা তদন্তে একজন মানবাধিকারবিষয়ক পরিচালক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। এ বছরের শুরুতে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকে এ নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। জাকারবার্গ তখন দাবি করেছিলেন, ফেসবুকে বার্মিজ ভাষায় পারদর্শী বিশেষজ্ঞের অভাবে মডারেটররা রোহিঙ্গাবিরোধী উসকানিগুলো দ্রুত শনাক্ত করতে পারেননি। রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধানসহ বেশ কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ করার কয়েক সপ্তাহের মাথায় নতুন এ সিদ্ধান্ত নিলো ফেসবুক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা গেছে। গত মার্চে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, ফেসবুক ব্যবহার করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হচ্ছে ও বর্ণবিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। গত আগস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতার কথা তুলে ধরে জাতিসংঘের সত্য অনুসন্ধান মিশন। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেসামরিক কর্তৃপক্ষও এই গণহত্যায় ইন্ধন জুগিয়েছে। এর কয়েক সপ্তাহের মাথায় নিজেদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহিংস উসকানি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। ফেসবুকের নতুন চাকরির বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে, 'ক্ষতিসাধন, কণ্ঠরোধ ও মানবাধিকার ক্ষুণœ করতে যারা এ মাধ্যমটিকে ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফেসবুক বদ্ধপরিকর। ফেসবুক ব্যবহার করে যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন না করা হয় তা নিশ্চিত করতে কাজ করবেন ফেসবুকের মানবাধিকার নীতিমালাবিষয়ক পরিচালক, এ ব্যাপারে ফেসবুকের বিভিন্ন দলকে পরামর্শ দেবেন তিনি।' উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলা হলেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সব পথ বন্ধ করতে আরসার হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিত সেনা-অভিযান শুরু হয়েছিল। চলমান জাতিগত নিধনে হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ। গত ২৭ আগস্ট মিয়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাংকে নিষিদ্ধ করে ফেসবুক। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে রাখাইনে রোহিঙ্গা সংকটের জন্য তাকে দায়ী করার পর এমন ব্যবস্থা নেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি। সেনাপ্রধান ছাড়া আরও ২০ জন বার্মিজ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করে তারা।

Share this post