Friday, Apr 26th

Last update09:04:19 PM GMT

: সম্পাদকীয় গ্যাস সংকট নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ নিন

গ্যাস সংকট নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ নিন

E-mail Print PDF

বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল একটি দেশ। এখানে রয়েছে হাজারো সমস্যা ও সংকট। এই সমস্যা-সংকটের পেছনে সরকারের উদাসীনতা, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জনসচেতনতার অভাবও অন্যতম কারণ। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে দীঘর্ দিন থেকেই গ্যাস সংকট চলছে। বিশেষ করে রাজধানীতে গ্যাস সংকট তীব্র। গ্যাস সংকটের কারণে অনেক পরিবারেই রান্না হচ্ছে না। অথচ এ ব্যাপারে সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কোনো কাযর্কর পদক্ষেপ নেই। ফলে জনদুভোর্গ বেড়েই চলেছে। রাজধানীতে তিতাস গ্যাসের সরবরাহ সম্পূণর্রূপে বন্ধ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ ছিল খুবই কম। কিন্তু গত শনিবার রাত থেকে একেবারেই গ্যাস আসছে না। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, গত বেশ কিছুদিন ধরে গ্যাসের মারাত্মক সংকট চলছিল। দিনের অধিকাংশ সময়ই গ্যাস থাকত না। রাতের বেলায় স্বল্প পরিমাণে যে গ্যাস পাওয়া যেত তা দিয়ে কোনো রকমে রান্না কাজ চলত। কিন্তু গত শনিবার রাত থেকে গ্যাস আসা সম্পূণর্রূপে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বাসাবাড়িতে রান্না-বান্না বন্ধ রয়েছে। জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে দিনে দিনে গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে প্রত্যেককেই গ্যাস সংকটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গ্যাস সংকটের কারণে বন্দরনগরীর অনেক কারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হলেও কেবল গ্যাস সংকটের কারণে তার তাৎপযর্ হারিয়ে ফেলছে। শুধু সরকারের পরিকল্পনা ও যথাযথ উদ্যোগের অভাবে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মনে রাখতে হবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ আবাসিক ও বাণিজ্যিক অঞ্চল। এ দুই শহরে গ্যাস সংকট দেখা দিলে একদিকে যেমন জনদুভোর্গ বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে কল-কারখানার উৎপাদন হ্রাসসহ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। যা দেশের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে না। এই অবস্থা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আঞ্চলিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিবেচনা করে, জনগণের দুেেভার্গর কথা চিন্তা করে গ্যাস সরবরাহের লাইন আরও বাড়াতে হবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের মহেশখালীতে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) প্লান্ট (কারখানা) রয়েছে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড যেমন পেট্রোবাংলার একটি প্রতিষ্ঠান, তেমনি আরপিজিসিএলও পেট্রোবাংলার একটি প্রতিষ্ঠান। আরপিজিসিএল থেকে গ্যাস রূপান্তর করে তিতাস গ্যাসের জাতীয় গ্রিড পাঠানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি আরপিজিসিএলের প্লান্টের যন্ত্রাংশে মারাত্মক ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা হওয়ার আগে আরপিজিসিএল জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করত। রাজধানী ঢাকায় ১ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গাসের চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে দেড় হাজার মিলিয়ন সরবরাহ পাওয়া যেতো।
তিতাস গ্যাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে বেশি গ্যাস দেয়ার কারণে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় আগের তুলনায় বেশি গ্যাস যাচ্ছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আগে পিডিপিকে গড়ে ৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দেয়া হতো, আর এখন দেয়া হচ্ছে ১০০০ ঘনফুট। সঙ্গত কারণেই রাজধানীতে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। জনদুেেভার্গর কথা বিবেচনা করে, গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে আর যাতে কোনো বিঘœ সৃষ্টি না হয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে সেদিকেই সবোর্চ্চ মনোযোগ দেয়া উচিত।

Share this post