Sunday, May 19th

Last update09:04:19 PM GMT

: শেষের পাতা ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রন চলাচল শুরু

ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রন চলাচল শুরু

E-mail Print PDF

স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বাংলাদেশের সর্বউত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড় থেকে সরাসরি ঢাকার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এতে করে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, ও স্থানীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করছে। গতকাল শনিবার সকাল ৭টা ২০মিনিটে দেশের দীর্ঘতম রেলপথের শুরুর এ স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় দ্রুতযান এক্সপ্রেস। রেলের পতাকা উড়িয়ে ঢাকা-পঞ্চগড় আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজাদ। এর মাধ্যমে গতকাল শনিবার পঞ্চগড়বাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হলো। এনিয়ে পঞ্চগড়ে বইছে আনন্দের বন্যা। এদিকে গতকাল শনিবার রাত ৯টায় পঞ্চগড় থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়বে একতা এক্সপ্রেস। এখন থেকে প্রতিদিন ঢাকা থেকে দ্রুতযান ছাড়বে রাত আটটায় এবং একতা ছাড়বে সকাল দশটায়। আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সূজন, রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন, জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত স¤্রাটসহ প্রমুখ। এর আগে ঢাকা-পঞ্চগড় আন্তঃনগর উদ্বোধনী ট্রেন দেখতে গত শুক্রবার রাত থেকে এলাকার শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ রেলস্টেশনে ভিড় জমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই ট্রেন লাইনকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। আগামি এক বছরের মধ্যে সমীক্ষা হবে। তারপরেই কাজ শুরু হবে। এই বন্দর দিয়ে আশ-পাশের দেশগুলোর সঙ্গেও রেল যোগাযোগের চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পঞ্চগড় রেলস্টেশন থেকে ট্রেন যাত্রার এই শুভক্ষণটিকে নানা আয়োজনে করছে পঞ্চগড়বাসী। এ উপলক্ষে ভোর সাড়ে ছয়টা রেলস্টেশনে সাধারণ মানুষ আসতে থাকে। জানা যায়, ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের আওতায় পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটারের এ রেললাইনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। ওই বছরের ৩১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেললাইনের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করে কাজের সূচনা করেন। রেললাইনের কাজ শেষ হয় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালের ১৭ জুন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক দিনাজপুর পর্যন্ত একটি ইর্ন্টাসিটি শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন। পরে এনিয়ে স্থানীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আন্দোলন শুরু করে। তারা সরাসরি ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন চলাচলের দাবি করে। এ বছরের ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁওয়ের এক জনসভায় ভিডিও কনফারেন্সে এ দাবি সম্বলিত ব্যানার দেখতে পেয়ে তার বক্তব্যে বলেন, ব্যানার নামিয়ে ফেলুন পঞ্চগড়ে ট্রেন যাবে। প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি সকালে বাস্তবায়নের ফলে সব শ্রেণিপেশার মানুষ আনন্দিত।

পূরণ হলো ঠাকুরগাঁওবাসীর স্বপ্নও: ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় পূরণ হয়েছে ঠাকুরগাঁওবাসীরও স্বপ্ন। গতকাল শনিবার সকালে ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশনে ঠাকুরগাঁও- পঞ্চগড়-ঢাকাগামী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম, পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, প্রেসক্লাব সভাপতি মো. মনসুর আলী, জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক কুরাইশী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি শাহ মো. এপোলোসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ ট্রেন চালুর মাধ্যমে ঠাকুরগাঁওবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় ঠাকুরগাঁওবাসী সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপিকে ধন্যবাদ জানান। ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ঠাকুরগাঁও-ঢাকা সরাসরি ট্রেন চলাচল। একটু দেরিতে হলেও তাদের এই প্রাণের দাবি পূরণ হওয়ায় তাদের উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজার হাজার সাধারণ মানুষের উপস্থিতির মাধ্যমে।

Share this post