Friday, Apr 26th

Last update09:04:19 PM GMT

: সম্পাদকীয় ধুলায় আচ্ছন্ন সড়ক

ধুলায় আচ্ছন্ন সড়ক

E-mail Print PDF

বছরজুড়েই সড়কে-মহাসড়কে কোনো না কোনো সমস্যা থাকে। কোথাও কার্পেটিং উঠে গেছে, কোথাও ভাঙা বা খানাখন্দ, কোথাও বা সড়ক দেবে গেছে। বর্ষাকালে এক ধরনের সমস্যাÑজলে-কাদায় রাস্তা বেহাল থাকে। শীতকালে তথা শুকনো মৌসুমে আরেক ধরনের সমস্যা, সড়ক-মহাসড়কে তখন ধুলার রাজত্ব। এ সবই সময়োপযোগী সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণসংক্রান্ত সমস্যা। আমাদের দেশে সড়ক ব্যবস্থাপনা এখনো আধুনিক হয়নি। নিয়মিত সড়ক-মহাসড়ক পরিদর্শন করা হয় না। ফলে যখন যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা হয় না।
এক প্রতিবেদনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর অংশের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। ওই অংশ ধুলাবালিতে একাকার। মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ক্যাডেট কলেজ থেকে জামুর্কী পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। ফলে ধুলাবালি তৈরি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। এমনিতেই শুকনো মৌসুমে রাস্তায় প্রচুর ধুলা থাকে, সংস্কার বা সম্প্রসারণের কাজ থাকলে তো কথাই নেই। ধুলার কারণে ওই অংশে যাত্রীদের, পথচারীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটির বিভিন্ন স্থানে গর্ত ও পাথরকুচি থাকায় প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে উল্লিখিত অংশের আশপাশের ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গাছপালা সব ধুলায় ছেয়ে আছে। সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় ধুলার ঘন স্তরের কারণে সামনের কিছুই দেখা যায় না। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে মোটরসাইকেল চালকরা। শুধু চলার সমস্যাই নয়, অতিরিক্ত ধুলার কারণে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের শ্বাসকষ্ট হয়। মহাসড়কের পাশের স্কুলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করা এবং মসজিদে মুসল্লিদের নামাজ পড়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশের এলাকার লোকজন জানিয়েছে, এ সমস্যা দুই বছর ধরে চলছে। উন্নয়নকাজ অনিয়মিত হওয়ায় দুর্ভোগ প্রলম্বিত হচ্ছে। এলাকার বেশির ভাগ পরিবারের সদস্যরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সড়কের কয়েকটি স্থানে পানি ছিটিয়ে সাময়িকভাবে ধুলা নিবারণ করা হয় বটে কিন্তু তা স্থায়ী সমাধান নয়। বরং পানি ছিটানের কারণে কাদা তৈরি হয়, সড়ক পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ে।
যথাযথ প্রক্রিয়ায় ও যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন না করা এবং নজরদারির অভাবে দেশের সড়কে-মহাসড়কে বিপত্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতির জন্য সংস্কার বা নির্মাণ বা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে হবে অবশ্যই। কিন্তু এসব কাজে যথাযথ সমন্বয়, সুষ্ঠুতা ও সময়-ব্যবস্থাপনা দরকার। এ কাজটিই হচ্ছে না। ফলে উন্নয়ন স্বস্তির বদলে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জনকল্যাণ নিশ্চিত করার জন্যই উন্নয়নÑজনস্বাস্থ্য, নির্মল পরিবেশ, স্বস্তিবিধান এর অংশ। উন্নয়নকাজের জন্য কিছু পরিমাণ বিঘœ মানুষ মেনে নেয় ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে কিন্তু সেটি মাত্রাতিরিক্ত হলে সমস্যা। আমরা আশা করি, যাত্রী, চালক, পথচারী ও আশপাশের মানুষÑসবার কথা ভেবে সংশ্লিষ্টরা কাজ করবেন।

Share this post