Wednesday, May 01st

Last update09:04:19 PM GMT

: সম্পাদকীয় নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের পুঁজিবাজার

নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের পুঁজিবাজার

E-mail Print PDF

দীর্ঘদিন ধরে প্রাণহীন, স্থবির ও সমস্যায় জর্জরিত দেশের পুঁজিবাজার। বাজারে লেনদেন অস্বাভাবিক রকম কমে গেছে। নতুন বিনিয়োগকারী তেমন আসছেন না। উল্টো বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের অনেকে ঝরে পড়ছেন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের অবদান বাড়ানোর জন্য যেখানে এ বাজারের পরিধি বড় করা দরকার, সেখানে যেন বাজার অনেকটা ছোট হয়ে আসছে। কেননা দিনের পর দিন নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কখনো সিন্ডিকেটের কারসাজিতে লোপাট হয়েছে বিপুল অর্থ। কখনো ফটকাবাজারিতে গচ্চা গেছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগের টাকা। পুঁজিবাজারে সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাতে বিভিন্ন সময়ে নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। বিশ্বের প্রায় সব দেশের পুঁজিবাজারে নিয়মিত বিরতিতে উত্থান-পতন ঘটে। আর পতন হলেও বিনিয়োগকারীদেরকে সাধারণত রাস্তায় নামতে দেখা যায় না। কিন্তু, বাংলাদেশে কিছুদিন পরপর বিনিয়োগকারীদেরকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
আমাদের দেশে পুঁজিবাজার মানেই মন্দা। এর বড় কারণ হলো- আমাদের দেশে পুঁজিবাজারের উত্থান কখনোই তার নিজস্ব শক্তিমত্তা দিয়ে হয়নি। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে মন্দা থাকুক আর উত্থান হোক গুটিকয়েক মানুষ এখানে প্রতিনিয়তই মুনাফা করছে। এরা এসব শেয়ারের দাম বাড়ানোর জন্য নানাভাবে কারসাজি করে থাকে। যেখানে সাধারণ মানুষ মুনাফা করতে পারে না, সেখানে মুনাফা করে এসব কারসাজিকারীরা। এসব শেয়ারেই মূলত সাধারণ বিনিয়োগকারীরা টাকা হারান। মুনাফা থাকলেও তা গুটিকয়েকের জন্য। তাই পুঁজি এ বাজারের দিকে ধাবিত হয় না। কবে সর্বশেষ বিদায়ী সপ্তাহেও সব মিলিয়ে নেতিবাচক অবস্থাই দেখা গেছে। টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। আবার কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম অভাবিত পরিমাণে বেড়ে গেছে কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই। এর পেছনে বিশেষ সিন্ডিকেট বা চক্রের হাত রয়েছে।
পুঁজিবাজারের ওপর মানুষের আস্থা এখন একেবারেই তলানিতে। যারা নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন তারা আর উঠে দাঁড়াতে পারেননি। অনেকে বাজার ছেড়ে গেছেন। তারপরও যারা বাজারে থেকে গেছেন তারা সতর্কতার সাথে লেনদেন করছেন। যদিও এ বিষয়ে নানাভাবে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হয়েছে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কিছু বড় কোম্পানির প্রভাববলয় ভাঙার কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যারা অতীতে বাজার লুণ্ঠন করেছে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি আইনি ব্যবস্থা। অর্থাৎ বাজারে সুশাসনের কোনো বালাই নেই। এই বিশৃঙ্খলার সুযোগ মাঝে মধ্যেই নিচ্ছেন প্রভাবশালীরা। এভাবে ফটকাবাজারি ও কারসাজিতে বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারাতে থাকলে বাজারের অস্তিত্বই হুমকিতে পড়তে পারে।

Share this post