Wednesday, May 01st

Last update09:04:19 PM GMT

: সম্পাদকীয় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু: সচেতনতা বাড়াতে হবে

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু: সচেতনতা বাড়াতে হবে

E-mail Print PDF

শিশু ও কিশোরদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো পানিতে ডুবে মৃত্যু। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতি বছর ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪০০ জন ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা যায়। যাদের ২০ শতাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম, যার ৯০ শতাংশ ঘটে নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশসমূহে। বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার খুবই ভয়াবহ। একটি জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত দেড় বছরে এক হাজার ৪০০ জন মানুষ পানিতে ডুবে মারা গেছেন। যাদের মধ্যে ৮৩ শতাংশই শিশু। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার দিনদিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে এক থেকে চার বছর বয়সি শিশুদের মৃত্যুর ৬৭ শতাংশের জন্য দায়ী পানিতে ডুবে মারা যাওয়া। পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার প্রধান কারণ হলো সাঁতার না শেখা। বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় শিশুদের পরিবারের সদস্যরা ব্যস্ত থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে। গ্রামের ৮০ ভাগ মানুষই কৃষি নির্ভরশীল। শিশুকে একা রেখে মা-বাবা নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে যায় সেই সময়ই দুর্ঘটনা গুলো বেশি হয়ে থাকে। দেশে একাধিক শিশু বিশেষভাবে জোড়া শিশু একই স্থানে একই সঙ্গে পানিতে ডুবে মারা যেতে দেখা যায়। সাধারণত একটি শিশু অন্য শিশুকে পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার সময় বাঁচাতে গিয়ে একসঙ্গে মারা যায়। সচেতনতার অভাব, বয়স্কদের মধ্যে শিশু-তত্ত¡াবধানের অভাব ও অবহেলা পানিতে ডুবে মৃত্যুর আরো একটি কারণ। বাংলাদেশে প্রতি বছর বন্যার কারণে স্থলভ‚মির বিশাল একটি অংশ তলিয়ে যায় ফলে ওইসব এলাকার শিশুরে সবথেকে বেশি ঝুঁকির ভিতর থাকে। আমাদের একটু সচেতনতাই পারে এই মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে। পরিবার ও কমিউনিটির মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। পরিবারের স্বজনদের সব সময় খেয়াল রাখতে হবে শিশু যেন একা একা কোনো জলাধারের কাছে না যায়। শিশুর বয়স ৫ বছর হলে তাকে সাঁতার শেখাতে হবে। বাড়িতে পানিভর্তি পাত্র বা বালতি সব সময় ঢেকে রাখতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এই সমস্যাকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে দেশের ১৬ জেলায় পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে। চলতি মাস থেকেই শুরু হচ্ছে এ প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের আওতায় ১৬ জেলার ৪৫টি উপজেলায় আট হাজার শিশু দিবাযতœ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ল²ীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, সিরাজগঞ্জ, নীলফামারী, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নে ১৬ টি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমে যাবে বলে আশা করা যায়।

Share this post