Wednesday, May 01st

Last update09:04:19 PM GMT

: সম্পাদকীয় হুমকিতে সংরক্ষিত বনাঞ্চল

হুমকিতে সংরক্ষিত বনাঞ্চল

E-mail Print PDF

দখলদারদের দ্রæত উচ্ছেদ করা হোক
একটি দেশে যে পরিমাণ বন থাকা প্রয়োজন বাংলাদেশে বন আছে তার চেয়ে অনেক কম। সামান্য যেটুকু বন আছে, তা-ও দ্রæত হ্রাস পাচ্ছে। বনের ভ‚মি দখল করে স্থাপনা তৈরিসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা, গাছপালা কেটে ধ্বংস করা, মাটি কেটে নেওয়াসহ নানাভাবে বন ধ্বংস করা হচ্ছে। সবচেয়ে দুঃখজনক যে বন রক্ষার দায়িত্বে থাকা বন বিভাগ এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারছে না। অভিযোগ আছে, অবৈধ লেনদেনের বিনিময়ে এই বিভাগের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজেরাই বন ধ্বংসে সহযোগিতা করছেন। সংবাদে প্রকাশ, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ইকোপার্কের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাহাড়গুলোর মাটি ও গাছ কেটে অবৈধভাবে ঘরবাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে দখল হয়ে যাচ্ছে পুরো । ইকোপার্কে ঢোকার মুখে শুধু নোয়াপাড়া ও আদর্শ গ্রামের উত্তর-পূর্ব দিকে চোখে পড়ে এমন সহ¯্রাধিক অবৈধ ঘরবাড়ি, দোকানপাট। বন বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। জানা যায়, বাঁশখালী ইকোপার্ক এখন শুধু কাগজে-কলমেই বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য। মশা-মাছি বা কিছু কীটপতঙ্গ ছাড়া সেখানে কোনো বন্য প্রাণীর দেখা মেলে না। কারণ সেখানে বন্য প্রাণী থাকার মতো পরিবেশই নেই। প্রতিনিয়ত পাহাড় কাটা হচ্ছে। নতুন নতুন বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। কিছু দালালের মাধ্যমে বনের জমি বিক্রিও করা হচ্ছে। শতাংশপ্রতি ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত দাম নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগ নিয়মবহির্ভূতভাবে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে পর্যন্ত বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করেছে। প্রতিটি অবৈধ ঘরে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। সারা রাত বৈদ্যুতিক বাতি জ¦লছে। ঘরে ঘরে চলছে টেলিভিশন। উচ্চৈঃস্বরে মাইকও বাজছে। জানা যায়, বন বিভাগ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা তো দূরের কথা, তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা পর্যন্ত করছে না। সারা দেশেই বনাঞ্চলের এমন দুরবস্থা চোখে পড়ে। আইনবহির্ভূতভাবে বনাঞ্চলের পাশে রয়েছে অসংখ্য ইটভাটা। এসব ভাটায় মূলত বনের কাঠ পোড়ানো হয়। রয়েছে অসংখ্য করাতকল। সারা রাত এসব করাতকলে বন থেকে চুরি করে আনা কাঠ চেরাই করা হয়। স¤প্রতি কাঠ কয়লা একটি লাভজনক পণ্য হয়ে উঠেছে। অনেক বনের পাশেই গড়ে উঠেছে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানোর চুল্লি। মাটি কেটে নেওয়া, বালু তোলা, জায়গা দখল করা, গাছ কেটে নেওয়াসহ বন ধ্বংসের বহু প্রক্রিয়া বিদ্যমান। আর এসবের সঙ্গে বন বিভাগের কিছু লোক যে জড়িত তার প্রমাণও পাওয়া গেছে অতীতে। কারো কারো বাসায় টাকার বালিশও পাওয়া গেছে। আমরা চাই, অবিলম্বে বন রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হোক। বাঁশখালী ইকোপার্কের অবৈধ দখলদারদের দ্রæত উচ্ছেদ করা হোক।

Share this post